সন্তানের বিরুদ্ধে বৃদ্ধা মাকে নির্যাতন করে বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ।

0

 

সন্তানের বিরুদ্ধে বৃদ্ধা মাকে নির্যাতন করে বাড়ি ছাড়া করার অভিযোগ।

রিয়াজুল হক সাগর,রংপুর:
রংপুরের মিঠাপুকুরে বীর মুক্তিযোদ্ধার বিধবা স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া এবং চেক বই কেড়ে নিয়ে ব্যাংকে জমানো সমস্ত টাকা উত্তলন করার অভিযোগ উঠেছে সন্তানের বিরুদ্ধে। এমনকি পুত্রবধু এবং ছেলের মারধরের ভয়ে তিনমাস থেকে বাড়ি ছাড়া ওই বৃদ্ধা।বুধবার (১২ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই অভিযুক্ত পুত্রবধু ও সন্তানের বিরুদ্ধে মিঠাপুকুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন তিনি।অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,মিঠাপুকুর উপজেলার ০৭ নং লতিবপুর ইউনিয়নের লতিবপুর (বউবাজার) গ্রামের মৃত-বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলীর স্ত্রী সহিদা বেওয়া(৭০)। তার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলী মারা গেলে মুক্তিযোদ্ধার মাসিক ভাতা তিনি পেতেন। এককালীন দশলাখ টাকা ব্যাংক ঋন করলে তিনি ছেলেমেয়েদের ভাগ করে দিয়ে দু’লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা রাখেন। কিন্তু বড় ছেলে শহিদুল ইসলাম তিনলক্ষ টাকা নেওয়ার পরও ব্যাংকে সহিদা বেওয়ার জমানো দুলক্ষ টাকা উত্তলনের জন্য চাপ দিতেন এবং মারধর করতেন। পরে সহিদুল ইসলাম চেক কেড়ে নিয়ে টাকা উত্তলন করেন।ব্যাংক ঋনের টাকা প্রতিমাস ১২০০০ টাকা কেটে নেওয়ার পর প্রতিমাসে তিনি আট হাজার টাকা পেতেন। কিন্তু সে টাকাও শহিদুল ইসলাম একাই ভোগ করতেন। গত ১২ ডিসেম্বর সহিদুল মাসিক সম্মানি ভাতা তুলতে শহিদা বেওয়াকে নিয়ে ব্যাংকে গেলে সহিদা বেওয়া ব্যাংক ম্যানেজারকে অভিযোগ করায়,শহিদুল তাঁকে জনসম্মুখে ব্যাংকের নীচে মারধর করে এবং বাড়িতে নিয়ে এসে তার স্ত্রী এবং সন্তানকে দিয়ে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর স্থানীয়রা শহিদা বেওয়ার শারিরীক অবস্থা খারাপ দেখে একই ইউনিয়নে বসবাসরত তার মেয়ে ফেন্সি বেগমের বাড়িতে পাঠান।এদিকে গত শুক্রবার (৯-ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ১০ ঘটিকার সময় দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে এবং শহিদা বেওয়ার রোগ বেড়ে যাওয়ায় মেয়ে ফেন্সি বেগম তার চিকিৎসার জন্য স্হানীয় জনপ্রতিনিধি এবং স্বজনদের নিয়ে ওই বৃদ্ধার স্বামীর বাড়িতে গেলে ছেলে শহিদুল রহমান উত্তেজিত হয়ে তার মা এবং বোন ফেন্সি বেগমকে বেধড়ক পেটায়। এসময় তার স্বামী মুক্তিযোদ্ধার নিজ বাড়িতে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শত চেষ্টা করেও শহিদুলকে স্থানীয়রা বোঝাতে পারেননি। পরে তাদের উদ্ধার করে নিকটস্থ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়।বৃদ্ধার দাবি- শেষ বয়সে ছেলের অত্যাচারে তার জীবন অতিষ্ঠ। লোভী ছেলে এবং পুত্রবধু কোনো কারণ ছাড়াই তাকে মারধর করেন। তার ভরনপোষণ না করে বরং মুক্তিযোদ্ধা ভাতার সম্মানীও খেয়ে ফেলেন। মানসিক আর শারিরীক যন্ত্রণা নিয়ে তিনি ভেঙ্গে পড়েছেন। এসময় ছেলের নির্যাতনের বর্ননা দিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে তিনি শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত এবং জখমের চিহ্ন দেখান।অভিযুক্ত সহিদুলের নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি তার বাড়িতে গিয়েও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী বাদী হয়ে তার ছেলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিট পুলিশ কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed